1. info@dailykrishokbarta.com : দৈনিক কৃষক বার্তা : দৈনিক কৃষক বার্তা
  2. info@www.dailykrishokbarta.com : দৈনিক কৃষক বার্তা :
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন

আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ।

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৩ বার পড়া হয়েছে

কৃষি প্রতিনিধি: আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে অধিক ফলন ও মানসম্পন্ন ফল পাওয়া সম্ভব। নিচে আধুনিক পদ্ধতিতে পেপে চাষের ধাপগুলো তুলে ধরা হলো:

১. মাটি নির্বাচন:

পেপে চাষের জন্য ভাল জলনিকাশযুক্ত, উর্বর, বেলে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। মাটির pH মাত্রা ৬-৭ হওয়া উচিত। মাটি পরীক্ষা করে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

২. জাত নির্বাচন:

আধুনিক চাষের জন্য হাইব্রিড জাত বেছে নেওয়া উচিত, যেমন ‘রেড লেডি’, ‘পিusa ডোয়ার্ফ’, ‘কোয়ামার’ ইত্যাদি। এই জাতগুলোতে দ্রুত ফলন পাওয়া যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ভালো।

৩. বীজ বপন:

* বীজ বপনের জন্য একক গর্ত তৈরি করতে হবে। গর্তের গভীরতা ৩০-৪০ সেন্টিমিটার হওয়া উচিত। প্রতিটি গর্তে ২-৩টি বীজ রাখতে হবে, যাতে যদি কোনো একটি না গজায়, অন্যটি গজায়। ২-৩ সপ্তাহ পর যখন চারা গজাবে, তখন সবল চারাটি রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলা হবে।

পলি ব্যাগে চারা তৈরি

পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপণের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৫X৪ ইঞ্চি . আকারের ব্যাগে সমান পরিমাণ বালি, মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে ব্যাগের তলায় ২-৩টি ছিদ্র করুন। তারপর সদ্য তোলা বীজ হলে রৌদ্রোজ্জ্বল, সহজে আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে এরকম উর্বর জমি বীজতলার জন্য বেছে নিতে হবে ।

৪. চারা রোপণ:

বীজতলায় বীজ বপনের ৪-৫ সপ্তাহ পর চারা যখন ১৫-২০ সেমি লম্বা হয়, তখন মূল জমিতে স্থানান্তর করা হয়। গাছের মধ্যে ২.৫-৩ মিটার দূরত্ব রাখতে হবে।

৫. সেচ ব্যবস্থা:

পেপে গাছ নিয়মিত সেচ প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে প্রতি সপ্তাহে এবং শীতকালে ১৫ দিনে একবার সেচ দেওয়া উচিত। মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য মালচিং করা যেতে পারে।

৬. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম ও সারের পরিমাপ

ইউরিয়া ৪০০-৫০০ গ্রাম

টিএসপি ৫০০ গ্রাম

এমওপি ৪৫০-৫০০ গ্রাম

জিপসাম ২৫০ গ্রাম

জিংক ২০ গ্রাম

বোরন ২০ গ্রাম

সার প্রয়োগের পদ্ধতিঃ চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পূর্বে প্রতি গর্তে ১৫ কেজি গোবর সার,টিএসপি, জিপসাম, জিংক সালফেট ও বোরিক এসিড দিতে হবে। ইউরিয়া ও এমওপি সার চারা রোপনের ১ মাস পর থেকে প্রতি মাসে একবার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া গাছে প্রতি ৫০ গ্রাম ও এমওপি ৫০ গ্রাম। গাছে ফুল এলে এই মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে। ফল তোলার ২ মাস আগে সার দেয়া বন্ধ করতে হবে।

৭. পোকা মাকড় ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনা

পোকামাকড়ঃ

পেঁপের মিলিবাগ/ছাতরা পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পেঁপের সাদা মাছি পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

রোগবালাইঃ

পেঁপের ড্যাম্পিং অফ রোগ দমনে অতিরিক্ত পানি বের করার ব্যবস্থা করুন। গোড়ায় ছাই ছিটিয়ে রাখতে পারেন।লাগানোর প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন: এমকজিম অথবা ৪ গ্রাম ট্রাইকোডারমা ভিরিডি মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধরে বীজ শোধন করে নিন।
পেঁপের গোড়া পচা রোগ দমনের জন্য কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- এইমকোজিম ২০ গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে অথবা প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন টিল্ট ৫ মিলি/ ১ মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।
পেঁপের শুটি মোল্ড দমনের জন্য মিলিবাগ পোকা দমন করতে হবে । মিলিবাগের আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার ( ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে )১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পাতায় হলদে মোজাইক ও পাতা কোকড়ানো রোগের বাহক পোকা (জাবপোকা) দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।
পেঁপের উইল্টিং রোগের রোগের প্রাথমিক অবস্থায় ১% বর্দোমিকচার বা কুপ্রাভিট ৪ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন। আক্রান্ত গাছের গোড়ার মাটিতে জিপসাম অথবা চুন প্রয়োগ করুন।

৮. ফল সংগ্রহ:

বীজ বপনের ৬-৮ মাস পর ফলন শুরু হয়। ফলের ত্বক যখন হালকা হলুদ রঙ ধারন করে, তখন ফল সংগ্রহ করা যায়।

৯. সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা:

ফল সংগ্রহের পর ফলগুলোকে পরিষ্কার করে বাছাই করতে হবে। সংরক্ষণের জন্য ফলগুলোকে ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে বাজারজাত করা যেতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© দৈনিক কৃষক বার্তা
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট