1. info@dailykrishokbarta.com : দৈনিক কৃষক বার্তা : দৈনিক কৃষক বার্তা
  2. info@www.dailykrishokbarta.com : দৈনিক কৃষক বার্তা :
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৭ অপরাহ্ন

নিম পাতা দিয়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি পদ্ধতি

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

নিম (বৈজ্ঞানিক নাম:AZADIRACHTA INDICA) একটি ঔষধি গাছ। নিম একটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ গাছ। এ গাছ ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এর কান্ড ২০-৩০ ইঞ্চি ব্যাস হতে পারে। পাতা কাস্তের মত বাকানো থাকে এবং পাতায় ১০-১৭ টি করে কিনারা খাঁজকাটা পত্রক থাকে। নিম গাছের ফল আঙুরের মতো দেখতে। জুন-জুলাইতে ফল পাকে, ফল তেতো স্বাদের। ভারত এবং বাংলাদেশের প্রায় সবত্রই নিম গাছ জন্মে। প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে ১০- ১২ বছর। নিম গাছ সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়া প্রধান অঞ্চলে ভাল হয়। মাটির পিএইচ মন ৬.২-৮.৫ এবং বৃষ্টিপাত ১৮-৪৬ ইঞ্চি ও ১২০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা নিম গাছের জন্য উপযোগী। নিমের ডাল, পাতা, ফল, ফুল, ছাল বা বাকল নিমের তেল, বীজ এক কথায় নিমের সমস্ত অংশ ব্যবহার করা যায়। বিশ্বব্যাপী নিম গাছের পাতা, শিকড়, ফল ও বাকল বিভিন্ন প্রকার ওষুধের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিমের পাতা থেকে আজকাল প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। খোস পাচড়া বা চুলকানি ও কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর। নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এ কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এ কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রাচীনকাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর উৎপাদ ও প্রসারকে উৎসাহ এবং অন্যায়ভাবে নিম গাছ ধ্বংস করাকে নিরুৎসাহিগ করা হচ্ছে। নিমের এই গুনাগুনের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষনা করেছে।
নিম যে উপকারী তা আমরা সবাই জানি। ফসলের পোকামাকড় দমনেও নিম এখন বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। নিম পাতা দিয়ে কার্যকারী জৈব কীটনাশক তৈরি করা যায়। জৈব বালাইনাশক হিসেবে নিমের নির্যাস রাসায়নিক কীটনাশকের চেয়ে সস্তা। নিম পাতার এই জৈব কীটনাশক ফসলের পোকা দমনে যেমন কার্যকারী তেমনি সস্তা ও পরিবেশের জন্য নিরাপদ বিধায় ফসলের রোগবালাই দমনে নিমের পাতা ও নির্যাস ব্যবহার অত্যন্ত উপকারী। এরই মধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জৈব বালাইনাশক হিসেবে নিমের ব্যাপক ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমরা আজ নিম পাতা দিয়ে কীটনাশক তৈরি দুইটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

নিম পাতা দিয়ে জৈব কীটনাশক তৈরি।

পদ্ধিতি ১:

উপকরণ:
১/ কাঁচা নিম পাতা ২০০ গ্রাম।
২/ পানি ১ লিটার।
৩/ সাবান গুড়া/ ডিটারজেন্ট পাউডার ৫ গ্রাম।
অথবা দুই চা চামচ লিকুইড সাবান (স্যাম্পু/ হ্যান্ডওয়াস/ ডিসওয়াস)।

বালাইনাশক প্রস্তুত প্রণালী :

প্রথমে ২০০ গ্রাম কাঁচা নিম পাতা ১ লিটার পানিতে যে কোন পাত্রে (মাটির পাত্র হলে ভালো হয়) ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখার পরে পাতা তুলে নিয়ে ভালোভাবে বেটে/পেষ্ট করে নিতে হবে। তারপর ঐ ১ লিটার পানিতে বাটা নিমপাতা ভালো করে মিশিয়ে পানি ছেঁকে নিতে হবে। এবার ৫ গ্রাম ডিটারজেন্ট পউডার ঐই পানির সাথে মিশিয়ে নিয়ে গাছে ভালো করে স্প্রে করতে হবে।
উক্ত মিশ্রনটি যে কোন লেদা পোকা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনে বিশেষ কার্যকারী। প্রয়োজনে ১০ দিন পর আবার ব্যবহার করুন।

বিঃদ্রঃ

১/ কীটনাশকটি সন্ধার পর গাছে প্রয়োগ করতে হবে।
২/ নিম পাতার তৈরি কীটনাশকটি সংরক্ষণ করা যাবে না।
৩/ স্প্রে করার ক্ষেত্রে কীটনাশকটি ভালো করে ছেঁকতে হবে।

নিম পাতা দিয়ে জৈব কীটনাশক তৈরি। পদ্ধতি ২।

উপকরণ:

১) কাঁচা নিম পাতা পেস্ট ১৫০ গ্রাম।
২) ঠান্ডা পানি ১ লিটার। (নরমাল ফ্রিজের পানি)
৩) সাবান গুড়া/ ডিটারজেন্ট পাউডার ৫ গ্রাম।
অথবা দুই চা চামচ লিকুইড সাবান (স্যাম্পু/ হ্যান্ডওয়াস/ ডিসওয়াস)।

বালাইনাশক প্রস্তুত প্রণালী :

প্রথমে ১৫০ গ্রাম নিম পাতা শিল পাটায় অথবা মিক্সার মেশিনে ভালো করে থেঁতো/পেস্ট করে নিতে হবে। ১ লিটার ঠান্ডা পানিতে মাটির পাত্রে ঐ নিম পাতা পেস্ট ৪৮ ঘন্টা/ দুই দিন ভিজিয়ে রেখে ভালো করে চটকে নিতে হবে। একটি পাতলা কাপড় দিয়ে কয়েক বার ছেঁকে নিয়ে ঐ পানিতে ৫ গ্রাম ডিটারজেন্ট পউডার অথবা ২ চা চামচ লিকুইড সাবান ভালো করে মিশিয়ে ফেলতে হবে। যে কোন স্প্রেয়ারে ভরে ব্যবহার করতে হবে।
উক্ত মিশ্রনটি যে কোন পোকা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনে বিশেষ কার্যকারী। প্রয়োজনে ১০-১৫ দিন পর আবার ব্যবহার করুন।
বিঃদ্রঃ
১/ কীটনাশকটি সন্ধার পর গাছে প্রয়োগ করতে হবে।
২/ নিম পাতার তৈরি কীটনাশকটি সংরক্ষণ করা যাবে না।
৩/ কীটনাশক তৈরিতে মাটির পাত্র ব্যবহার করুন।
৪/ গাছের উপর ও নিচের পিঠ স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে।

লেখকঃ মো: মাহফুজুর রহমান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
Email. mahfuzdae56@gmail.com

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© দৈনিক কৃষক বার্তা
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট